May 18, 2024, 7:48 pm

ব্রয়লার মুরগী কিনে খাওয়া এখন দুঃস্বপ্ন নিম্ন আয়ের মানুষের

কোটচাঁদপুর সংবাদদাতা।।

ব্রয়লার মুরগী কিনে খাওয়া এখন দুঃস্বপ্ন নিম্ন আয়ের মানুষের। ব্রয়লার মুরগী খাওয়া ছাড়তে হবে আমাদের
‘সপ্তাহে একবার মুরগি কিনতাম। এখন সেটারও দাম ২২০ টাকার ওপরে। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে ব্রয়লার মুরগীর মাংস খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে কামাই করতে না পারলে কিনবো কি দিয়ে।

ব্রয়লার মুরগি কিনতে বাজারে আসা রিক্সা চালক (৬৫) বছর বয়সী রশিদ মিয়া কিছুক্ষণ থমকে থেকে এসব কথা বলছিলেন দৈনিক নবচিত্র প্রতিবেদক কে । গতকাল রবিবার সকালে কোটচাঁদপুর মেইন বাজারে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে মুরগী কিনতে এসে বেশি দাম দেখে ফিরে গিয়েছিলেন। এ সপ্তাহে এসে দেখেন দাম আরও বেড়েছে। বাচ্চারা প্রতিদিন সবজি বা নিরামিষ খেতে চায় না। তাই বাজার ঘুরে ছোট মুরগি খুঁজছেন তিনি।
প্রতিনিয়ত ব্যয় বাড়ছে জানিয়ে রশিদ মিয়া বলেন, রিক্সা চালিয়ে অল্প আয় হয়। ৫ জনের সংসার ১৫ বছরের ছেলেটা কাঠ ফাঁড়ায় করা মিলে কাজ করে। দুই ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে দুজনের আয় মিলিয়েও অভাব লেগেই থাকে। প্রতিদিন কিছু না কিছুর দাম বাড়ছে। অভাবের সংসারে এটা অনেক বড় ধাক্কা।’

নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের খাবারে মাংসের জোগানের জন্য কম খরচে মিলত ব্রয়লার মুরগী। মুরগীর দাম বৃদ্ধির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা।

বর্গা চাষী তমিজ উদ্দিন বলেন, পরের ক্ষেতে জন দিয়ে কোন রকম টেনেটুনে সংসার চালায়। ৪ জনের সংসার মাংস খাওয়া তো দুরের কথা ঠিক মতো মাছ,ডিমই জোটে না। ছোট মেয়ে টা বাইনা ধরেছে মাংস খবে তাই বাজার এসেছি। ৩০০ টাকা দিয়ে এক কেজি সোনালী মুরগী নিলাম। দেশি মুরগী, গরুর মাংস, ছাগলের মাংস বছরে একদিন খাওয়ার স্বপ্নও দেখিনা।

পৌর এলাকার কলেজ স্টান্ড, মেইন বাসস্ট্যান্ড, চৌগাছা স্টান্ড, মেইন বাজার বাজার ঘুরে দেখা যায় , গত সপ্তাহের তুলনায় মুরগীর দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি প্রায় ৩০-৪০ টাকা। বাজারগুলোতে এখন ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়। অন্যদিকে সোনালি মুরগি ৩০০ টাকা ও দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মুরগির ডিম প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়।

গরুর মাংস ৭০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, অন্যদিকে খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯০০-১০০০ টাকা কেজি। আকারভেদে তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২৪০, রুই ১৮০ থেকে ২৫০ ও কাতলা মাছ ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও অন্যান্য মাছ বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন দামে।

কোটচাঁদপুর বাজারের মুরগি বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, মুরগির খাবার আর আনুষঙ্গিক খরচ বৃদ্ধির কারণে দাম বাড়িয়েছেন খামারিরা।তাও ঠিক মতো পাওয়া যাচ্ছে না। পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে সবকিছু কিনতে হচ্ছে। আজ সকালে ঝিনাইদহ থেকে মুরগী কিনে নিয়ে আসলাম গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ৩০ টাকা বেশি দিয়ে। তাই খুচরা বাজারেও দাম বেশিতে বিক্রি করতে হচ্ছে কিছু করার নেই।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরও সংবাদ :